ঢাকা, 16 জুলাই, 2023 (বাসস) : প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আজ সংশ্লিষ্ট সবাইকে বৈশ্বিক মানের সাথে মানানসই শিক্ষার মান উন্নয়নে একযোগে কাজ করার আহ্বান জানিয়েছেন।
তিনি বলেন, "দেশে শিক্ষার মানের অনেক উন্নতি হয়েছে। আমরা বিশ্বমানের সাথে তাল মিলিয়ে শিক্ষার মান আরও উন্নত করতে চাই। এটা আমাদের লক্ষ্য এবং লক্ষ্য অর্জনের জন্য আমাদের কাজ করতে হবে।"
রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে (বিআইসিসি) জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধিভুক্ত কলেজের অধ্যক্ষদের জাতীয় কাউন্সিল এবং বৃত্তি বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী এ মন্তব্য করেন।
শিক্ষার সার্বিক উন্নয়ন নিশ্চিত করার জন্য তার সরকারের পদক্ষেপের সংক্ষিপ্ত বর্ণনা দিয়ে তিনি বলেন, বিজ্ঞান ও প্রযুক্তির যুগে নিরন্তর পরিবর্তনশীল বিশ্বের সাথে মোকাবিলা করার জন্য তারা প্রজন্মকে যোগ্য করে তোলার জন্য প্রতিটি সম্ভাব্য পদক্ষেপ শুরু করেছে।
তিনি বলেন, "শিক্ষা ব্যবস্থাকে বহুমাত্রিক করার জন্য আমরা পদক্ষেপ নিয়েছি। আমরা পিছিয়ে থাকতে চাই না। আমাদের শিশুরা মেধাবী হওয়ায় আমাদের বিশ্বব্যাপী শিক্ষার একই গতি বজায় রাখতে হবে।"
শিক্ষাকে বহুমাত্রিক করার উদ্যোগের অংশ হিসেবে তিনি বলেন, তারা প্রতিটি জেলায় বিশ্ববিদ্যালয়, চারটি বিভাগীয় সদরে চারটি মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়, ইসলামিক আরবি বিশ্ববিদ্যালয়, ডিজিটাল বিশ্ববিদ্যালয়, এরোস্পেস অ্যান্ড এভিয়েশন বিশ্ববিদ্যালয় এবং বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় স্থাপনের পাশাপাশি মেডিকেল কলেজ প্রতিষ্ঠা করেছে।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের আগে দেশে ও বিদেশে ক্রমবর্ধমান চাহিদা মেটাতে তার সরকার তরুণ প্রজন্মকে দক্ষ কর্মী হিসেবে গড়ে তুলতে চায়।
তিনি বলেন, "আমরা ন্যানো-টেকনোলজি এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা এবং অন্যান্য বিষয়ে শিক্ষা লাভের সুযোগ তৈরি করতে 39টি হাই-টেক পার্ক, কম্পিউটার ইনকিউবেশন ট্রেনিং সেন্টার স্থাপন করেছি যাতে প্রজন্মের পর প্রজন্ম এক ধাপ এগিয়ে যেতে পারে।"
শেখ হাসিনা শিক্ষার্থীকে স্বাধীন বাংলাদেশের যোগ্য নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে অধ্যক্ষ ও শিক্ষকদের প্রতি আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, "তরুণদের এমনভাবে শিক্ষিত করুন যাতে তারা স্বাধীন বাংলাদেশের যোগ্য নাগরিক হিসেবে নিজেদের গড়ে তুলতে পারে।"
তিনি আরও বলেন, আজকের প্রজন্ম আগামী দিনের বাংলাদেশের কর্ণধার হবে।
প্রধানমন্ত্রী শিক্ষার্থীদের পড়ালেখায় বেশি মনোযোগ দিতে এবং দেশপ্রেমিক হতে এবং দেশ ও জনগণের কল্যাণে দায়িত্ব পালনের আহ্বান জানান।
তিনি ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশকে ক্ষুধা, দারিদ্র্য ও যেকোনো ধরনের শোষণমুক্ত একটি স্মার্ট সোনার বাংলা হিসেবে গড়ে তোলার মাধ্যমে সবাইকে উন্নত ও যোগ্য জীবন দান করে জাতির পিতার কল্পনা অনুযায়ী বাংলাদেশি জনগণের ভাগ্য গড়তে তার অঙ্গীকার পুনর্ব্যক্ত করেন।
তিনি বলেন, ‘এটা আমার কথা যে আমি আমার শেষ নিঃশ্বাস পর্যন্ত বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনের কাজ চালিয়ে যাব।
প্রধানমন্ত্রী ১০ জন অসচ্ছল মেধাবী ও বিশেষভাবে প্রয়োজনীয় শিক্ষার্থীদের মধ্যে বৃত্তি তুলে দেন।
মোট 12394 জন শিক্ষার্থী---11,285 জন অসচ্ছল মেধাবী এবং 1109 জন বিশেষভাবে প্রয়োজনীয় শিক্ষার্থী--- প্রায় 6,19,70,000 টাকার বৃত্তি পেয়েছে।
একই অনুষ্ঠানে প্রধানমন্ত্রী জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের অধীনে আইসিটি মাস্টার প্ল্যানসহ কয়েকটি উন্নয়ন প্রকল্পের মোড়ক উন্মোচন করেন এবং উন্নয়ন প্রকল্পের তালিকায় স্বাক্ষর রাখেন।
জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মশিউর রহমানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন শিক্ষামন্ত্রী ড. দীপু মনি।
অনুষ্ঠানে অধ্যক্ষদের পক্ষে বক্তব্য রাখেন কুমিল্লার সেলিম সোনার বাংলা কলেজের দুই অধ্যক্ষ আবু সালেক মোহাম্মদ সৌরভ এবং রাজশাহী সরকারি মহিলা কলেজের জুবাইদা আয়েশা সিদ্দিকা।
পাশাপাশি দুজন বৃত্তি গ্রহীতা তাদের মতামত ব্যক্ত করেন।